ইন্দ্রজালঃ হাজার বছরের পিছুটান ২

 


ইন্দ্রজালের প্রথম ভাগটা পড়েছিলাম গতবছর । কদিন আগে ২য় ভাগটা পড়ে শেষ করলাম । এই বইটা পড়ে বুঝতে হলে আগের বইটা অবশ্যই পড়তে হবে । এই বইটাও শুরুও সেই সায়মনকে দিয়ে । সে থাকে রোমে, সময়টা ১৮১২ সাল । এই বইয়ের কিছুটা পড়তেই আগের বইয়ের কথা মনে পড়বে । আগের বইটা ছিল মূলত একটা টাইম লুপ । একটা টাইম লুপের ভেতরে সায়মন আটকে গেছে এবং বারবার একই ভুল করে সে এই ভাবে মারা পড়ছে একই ভাবে

জন্মগ্রহন করছে । একই ঘটনা বার বার ঘটছে । জিউস কন্যা বারবার স্বপ্নে তাকে নানা রকম ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছে যেন সেই একই ভুল সে আবার না করে । কিন্তু সায়মন ঠিক একই কাজ করেই যাচ্ছে 


এই বইতেও আরেকটা টাইম লুপের সৃষ্টি হয় । তবে এটাই হচ্ছে শেষ টাইম লুপ । এইবারই সায়মানের জীবনের ইতি হবে এমন একটা ইঙ্গিত প্রাইডন দেয় । একই ভাবে এইবারও রোম থেকে সে গ্রীসে যাত্রা শুরু করে । তবে এইবার একটু ব্যতীক্রম ঘটনা ঘটে । যে প্রাইডান যে কারণে সায়মনের উপরে রাগ করেছিলো সেইটা এইবার আর ঘটে না । তবে সেই ঠিক ঠিক গ্রীসে যায় । যায় সেই মন্দীরেও । এবং সেই অভিশপ্ত দরজাটাও খুজে পায় । প্রথমবার দরজা দিয়ে প্রবেশ না করলেও নিজের মনকে সে শান্ত করতে না পেরে সেই একই দরজা দিয়ে প্রবেশ করে এবং দুই হাজার বছর পিছনে সেই রোমে গিয়ে হাজির হয় । জুলিয়াস সিজারের সময়ে । সেখানে সে একই ভাবে ইজাবেলার দেখা পায় । ইজাবেলার প্রতি তার দুর্দমনীয় আকর্ষণও তৈরি হয় । একই ভাবে ইজাবেলার বাবা মারা যায় । সায়মান তারপর ইজাবেলার দেখা শুরু করতে থাকে । তবে এইবার কিছু কিছু ব্যতীক্রম ঘটনা ঘটে । একই ভাবে সে রাজচিত্রকর হিসাবে পদায়িত হয় । সিজারের ছেলের সাথে বন্ধুত্ব হয় । ইতিহাসে ঠিক যেভাবে সিজার মারা পড়ে এইবারও ঠিক একই ভাবে মারা পড়ে ! 


এবং দেখা যায় যে ভুলটা সায়মন করতো বারবার সেই ভুলটা এইবার করতে গিয়েও করে না । তার জীবনে আর সেই বিপর্যয় নেমে আসে না । যেভাবে বেঘোরে আগের লুপ গুলোতে মারা পরতো সে এইবার আর সেই রকম কিছু হয় না । কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসলেই সে ভুলটা করা থেকে নিজেকে আটকাতে পারে? সেটা বলে দিলে অবশ্য বই পড়ার মজা শেষ হয়ে যাবে । তাই এটা নাই বা বলি ! 


জিনি তানহাবের লেখার আমার খুব বেশি পছন্দ সেটা আমি বলবো না । তবে আগের পর্বটা আমার বেশ ভালই লেগেছিলো । কিন্তু এই পর্বটা কেন জানি অতোখানি ভাল লাগে নি । তবে আগের পর্ব শেষ করে যেমন ইজাবেলার জন্য একটা মন খারাপ করা অনুভূতি জেগেছিলো এই পর্বটা শেষ করে সেটা বিলিন হয়েছে । এই বইটা পড়ে এই একটা চমৎকার অনুভূতি । 


বইয়ের নাম ইন্দ্রজাল 

লেখিকা জিমি তানহাম 

ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত 


প্রথম পর্বের রিভিউ