স্ট্রেঞ্জ পিকচার্স ও স্ট্রেঞ্জ হাইজেস

 লেখক উকেতসু একজন অদ্ভুত চরিত্র। ইউটিউবে তার একটা চ্যানেল আছে। সেখানে সে অদ্ভুত মুখোস পরে আসে। তার লেখা বই হচ্ছে স্ট্রেঞ্জ পিকচার্স

গল্পের শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম থেকে। সেখানে একটা ছবি দেখানো হয়। ছবিতে একটা ঘর একটা ছোট মেয়ে আর একটা গাছ রয়েছে। গায়ের ফোকরের ভেতরে রয়েছে একটা ছোট পাখি। এই ছবিটা একেছিল ১১ বছরের এক মেয়ে যে কিনা তার মায়ের খুনের দায়ে অভিযুক্ত। এই ছবি দেখেই মনবিজ্ঞানী সেই মেয়েটার সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে তার শিক্ষার্থীদের। এটা থেকেই গল্পের শুরু। 

সাসাকি নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তার জুনিয়ার ইয়ারের কুরিহারা কাছ থেকে একটা ব্লগের সন্ধান পায়। রেন নামের একজনের ব্লগ। সেই ব্লগেই সে নিজের নানান জিনিসের আপডেট দিতে থাকে। স্বাভাবিক একজন মানুষের ব্লগ যেভাবে হয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ সে আপডেট দেওয়া বন্ধ করে দেয় তবে তার আগে সে অদ্ভুত কয়েকটা কথা আর ছবি আপলোড দেয়। তারপর একদম চুপ হয়ে যায়। এইবার সাসাকি আর কুরিহারা সেই ছবি যখন তারা এক সাথে বিশ্লেষণ করে তখন এক ভয়ংকর রূপ নেয়। ছবিগুলোর ভেতরে একটা রহস্য লুকিয়ে আছে। ভয়ংকর এক অপরাধের গল্প। এরপর নাওমি কান্নো তার ছয় বছরের ছেলে ইয়ুতাকে নিয়ে সুখের দিন কাটাচ্ছিল কিন্তু তখনই তার মনে হতে থাকে যেন কেউ তাদের উপর নজর রাখছে, তাদের পিছু নিচ্ছে। নওনি ভয় পেলেও সে পুলিশের কাছে যেতে চায় না। আর্টের শিক্ষক ইয়োশিহারু মিউরার হাইকিংয়ের শখ অনেক বেশি। সময় সুযোগ পেলেই সে হাজির হয় পাহাড়ে। সেদিনও সে কে পাহাড়ে গিয়ে হাজির হয়েছিল তার বন্ধুর সাথে। বন্ধুটি কিছু তার সাথে গিয়ে বাসায় ফিরে আসে কিন্তু সে পাহাড়ে রাত কাটাবে বলেই সামনে এগিয়ে যায়। তবে পরদিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে সে অদ্ভুত ভাবে পাহাড়ের ছবি একে রেখে যায়। ঠিক তার তিন বছর পরে তার ছাত্রেরও একই ভাবে সেই পাহাড়ে মৃত্যু হয়। সে মিউরার খুনের রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা করছিল।

আদতে এই খাপছাড়া ঘটনাগুলো আলাদা আলাদা মনে হলেও এক সময়ে দেখা যাবে প্রতিটা ঘটনাই একে অন্যের সাথে জড়িত। একেবারে খুব জটিল রহস্যের গল্প বলব তবে পড়তে ভাল লাগবে। গল্পে গতি আছে আর আছে বুদ্ধিদ্বীপ্ত উপকরণ। 


একই লেখকের আরেকটা বইয়ের নাম স্ট্রেঞ্জ হাউজেস। 

এই বইয়ের গল্পের কখন একজন ফিল্যান্সার লেখক। নিজের মর্জি মাফিক লেখালেখি করে। তার বন্ধু একটা বাড়ি কেনার ব্যাপারে তার কাছে পরামর্শের জন্য একটা বাড়ির ফ্লোর প্লান পাঠাবে। সেই পর্যবেক্ষণ করেও তার ভেতরে একটা অদ্ভুত জিনিস খেয়াল করবে। সে তারপর তার পরিচিত কুরিহারাকে সেই ফ্লোর প্লান পাঠাবে। এই কুরিহারা চরিত্রটা আগের বইতেও আছে। তারপর দুজন মিলে এই আলোচনা করে কুরিহারা এক অদ্ভুত সম্ভবনার কথা লেখক জানাবে। এবং অদ্ভুত ভাবে দেখা যাবে যে সেই বাড়ির কাছে আসলেই একটা লাশ পেয়েছে পুলিশ। তখন লেখকের বন্ধু যে কিনা বাড়িটা কিনতে চেয়েছিল সে আর কিনতে চাইবে না। লেখক ভাববে যে যখন আর বন্ধ বাড়িটা কিনছে না তখন তার চিন্তার কোন কারণ নেই। কিন্তু চাইলেও নিজের মাথা থেকে বাড়ির চিন্তা সে বের করতে পারবে না। শেশে সম্পাদকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বললে সে তাকে পরামর্শ দেবে যে এই বাড়ির ফ্লোর প্লান নিয়ে একটা প্রতিবেদন করে ফেলুক বরং। আসল বাড়ির নাম ঠিকানা না দিলেই হল। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হবে। সেই মোতাবেক কাজ হল। 

বেশ কয়েকটা ইমেল এসে হাজির হল লেখকের কাছে এই প্রতিবেদন ছাপানোর পরে। একজনের ইমেল তাকে বেশ ভাবিয়ে তুলল। সে মেয়েটির সাথে দেখা করতে রাজি হল। দেখা করে মেয়েটি তাকে জানালো যে ঠিক এমন একটা বাড়ির ফ্লোর প্লান তার কাছেও রয়েছে এবং সম্ভব এই বাড়িতে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। দুটো বাড়ির নকশা তাদের হাতে এসেছে এবং দুটো বাড়িতে একই রকম অদ্ভুত একটা ছোট ঘর রয়েছে। দুই বাড়ির আশে পাশে একজন একজন করে মৃতদেহ পাওয়া গেছে। রহস্য তো আছেই এই বাড়িগুলোর ভেতরে। 

এই বইটাও আগের বইটার মতই। কুরিহারা এবং লেখক দুজন মিলে এই বাড়ির রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করে এবং এক সময়ে এই অদ্ভুত বাড়ির পেছনের রহস্য জানতে পারে। কেন এই বাড়ির নকশাগুলো এমন ভাবে তৈরি আর এর পেছনের কাহিনী আসলে কী!