আলভী আহমেদের গোস্টরাইটার পড়ে তার লেখার উপরে একটা আলাদা ভরশা সৃষ্টি হয়েছিল। তাই মেলা থেকে তার নতুন বের হওয়া বই অল কিনে ফেললাম সবার আগে। বাসায় এনে পড়াও শুরু করে দিলাম। তবে বই শেষ করে আমার কাছে যেন জানি সেই আশাটা পূরণ হল না। আসলে সম্ভবত আমি নিজে খুব বেশি আশা নিয়ে বই পড়া শুরু করেছিলাম। এই কারণে যখন সেই আশা পূরণ হল না তখন খানিকটা হতাশ হতে হয়।
এই গল্পের ভেতরে আমি আসলে নতুনত্ব কিছু পাই নি। কিংবা বলা যায় এমন কিছু আমার মনে হয় নি যা আমি মনে রাখতে পারি। অন্যদিকে গোস্ট রাইটারটা ছিল পুরোটাই একটা চমৎকার কনসেপ্টের একটা গল্প। অবশ্য আবার একটাও একটা কারণ হতে পারে যে গোস্টরাইটার পড়া শুরু করেছিলাম কোন প্রকার আশা ছাড়াই। এই জন্যই হয়তো ।
যাক অল-ইন এর গল্প শুরু করা যাক। সুমন একটা পোকার জিনিসয়াস। ছোট বেলা থেকেই তার মাথা খুবই পরিস্কার। আগে সে দাবা খেলত পরে সে পোকার খেলা শুরু করল এবং সাফল্য পাওয়া শুরু করল। আমাদের দেশে পোকারকে জুয়া হিসাবেই দেখা হয়। তাই এই খেলা এই দেশে পোকার খেলা বেআইনি। তবে বেশ কিছু গ্রাউন্ড আছে যেখানে নিয়োমিত খেলা হয়। সুমন এই সব গ্রাউন্ডে গিয়ে খেলা করে আবার অনলাইনেও খেলে।
এই পোকার খেলতেই সে ভারতের গোয়াতে গিয়ে হাজির হয়। সেখানেই প্রথম বারের মত এতো প্লাটফর্মে খেলছে সে। তবে বেশ ভাল করলো যে। তার খেলা দেখেই কলকাতার একটা এজেন্সি সুমনের সাথে একটা ডিল করে। তারা সুমনের উপরে ইনভেস্ট করল। শর্ত হচ্ছে যে যতখানি টাকা পোকার খেলে আয় করবে তার অর্ধেকটা তাদের দিতে হবে। আর যদি টাকা হেরে যায় তবে কোন সমস্যা নেই। ইচ্ছে ছিল কেবল পোকার টুর্নামেন্ট খেলেই দেশে ফিরবে কিন্তু তার আর এতো জলদি ফেরা হল না। তিন মাস সে রয়ে গেল ইন্ডিয়াতেই।
পোকার প্রতিযোগিতার সময় সে এক মেয়েকে দেখে । মেয়েটাকে আহামরি সুন্দরী সেটা বলা যাবে না তবে সুমন সেই মেয়ের প্রেমে পড়ে। একেবারে প্রথম দেখাতেই। তার পোশাক দেখেই বুঝতে পারে যে পোকার সার্ভার। ক্যাসিনোর হয়ে কাজ করে। শুরু হয় মেয়েটিকে খোজা। এক সময়ে কেবল মেয়েটিকে সে খুজেই পায় একেবারে মেয়েটি চলে আসে তার বাহুডোরে কিন্তু তারপর সে সত্যটা সুমন জানতে পারে তাতে পুরো পৃথিবীটাই যেন নড়ে ওঠে।
গল্পের শেষটা আমি বেশ জম-জমাট আশা করেছিলাম কিন্তু দেখা গেল সেটার ধারে কাছেও যায় নি। বলা চলে বইটা শেষ করে আমি বেশ হতাশ হলাম।
অবশ্য এই মন মত না হওয়ার পেছনে আরেকটা কারণ হতে পারে যে আমি পোকার খেলার কিছুই বুঝি না। এমন কি লেখক বেশ সহজ করেই খেলাটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এবং বইয়ের শেষে শব্দজটও দিয়েছেন কিন্তু তারপরেও খেলাটা আমার মাথার উপর দিয়েই গেল। যারা পোকার খেলা জানেন কিংবা ভালোবাসেন তাদের কাছে বইটা ভাল লাগলেও লাগতে পারে।
অন্য আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, এই বইয়ের প্রথম চ্যাপ্টারটা আমার কাছে কেন জানি একেবারেই অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। গল্পটাতে প্রথম কথকের উপস্থিতি একেবারেই দরকার ছিল না । সরাসরি সুমনের জবানিতেই গল্প শুরু হতে পারত।
অল ইন
আলভী আহমেদ