লাশ কাটার ঘরে

দীপন একটি সরকারি হাসপাতালে ডোমের কাজ করে। তার প্রধান কাজই হচ্ছে মর্গে লাশের কাটাছেড়া করা এবং তার বিপরীতে রিপোর্ট তৈরি করা । সে কাজ কর্মে খুবই দক্ষ । কিন্তু একদিন এই সব কিছু ছন্দ পতন ঘটে । দীপ্ন আর নিজের কাজ ঠিক মত কাজ করতে পারে না। মর্গের লাশের সাথে দীপন ভয়ংকর আর নোংরা কাজ শুরু করে। মানসিক ভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে শুরু করে সে। বাধ্য হয়েই মনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা নাবিলার কাছে গিয়ে হাজির হয় সে। চিকিৎসা শুরুর আগে নাবিলা পুরোপুরি ভাবে দীপনের রোগটা বুঝতে চেষ্টা করেন। কিন্তু নাবিলার কাছে মনে হয় যীন দীপন তাকে সব সত্যি কথা বলছে না । ফলে সে নিজেই দীপনের অতীত সম্পর্কে খোজ খবর শুরু করেন। এবং দীপনের অতীত সম্পর্কে ভয়ংকর সত্য জানতে শুরু করেন । দীপন নিজের সম্পর্কে যা বলেছিল তার প্রায় সব টুকুই মিথ্যা অন্য দিকে অতীতে সে এক ভয়ংকর অপরাধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল । সেই ভয়ংকর অপরাধের থেকে তার নতুন জীবনের শুরু । নিজেকে একেবারে বদলে ফেলা এবং নতুন ভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা । যদিও পরে সেই সত্তার উদ্ভব ঘটে আবার । এরই ভেতরে থানা থেকে দীপনকে ধরার জন্য নোটিশ জারি হয় । কারণ যে কয়েকটা মেয়েকে রেপ করে হত্যা করা হয়েছে তাদের গোপনাঙ্গে দীপনের সিমেন পাওয়া গেছে । দীপনই কি তাহলে সেই মেয়ে গুলোকে ধর্ষন করে হত্যা করেছে? 

কিন্তু নাবিলা এখনও বিশ্বাস করে যে দীপন নির্দোষ । বরং সে ভয়ংকর এক মানসিক রোগের শিকার। গ্রেফতার নয় তার আগে দরকার চিকিৎসার । সেটা করার জন্য আগে নাবিলাকে জানতে হবে দীপন আসলে কে? কী তার আসল পরিচয় ? সে কিভাবে আজকের এই অবস্থানে এল এটা নাবিলাকে খুজে বের করতে হবে!

থ্রিলার ঘরোয়ানার একটা বই । সেই একই সাথে এতে রয়েছে কিছুটা ভৌতিক স্বাদ । আমার সব সময় এই টাইপের বই পড়তে বেশি পছন্দ । তবে এই বইতে একটা ব্যাপার আমার কাছে একটু অদ্ভুত মনে হয়েছে সেটা হচ্ছে মাত্র মেট্রিক পাশ একটা ছেলের পক্ষে আসলেই এতো স্মার্ট আচরণ করা সম্ভব কিনা । লেখা এখানে আরও দুই তিন ক্লাস উপরে পড়ালে কিংবা এমন কিছু দেখালে যেখানে দীপন নিজেই সেলফ এডুকেশন নিয়েছে, প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস সেই ক্ষেত্রে ব্যাপারটা মানান সই হত বেশি। এছাড়া খুনের কেস কখন আপনা আপনি চলে যায় না । ফাদারের খুনের ব্যাপারটা যেমন ভাবে দেখা গুনো হয়েছে সেটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় নি । এছাড়া এই বইতে বেশ কিছু সাইকোলজি/মেডিক্যাল টার্ম রয়েছে । ব্যাপার গুলো আমার জানা ছিল না । কয়েকটা নিয়ে আমি নিজেই পড়াশোনা করলাম । লেখক সেই ব্যাপার গুলো বেশ সহজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন । এটাও এক ঐঠকে পড়ে ফেলার মত বই। 


বইয়ের নাম লাশ কাটার ঘরে

লেখক মহিউদ্দিন মোহাম্মাদ যুনাইদ

মোট পৃষ্ঠা ১২৮

মুদ্রিত মূল্য ৩৪০টাকা

বাংলার প্রকাশন থেকে প্রকাশিত