কে জানে কী মন্দ ভাল

বইয়ের নাম ‘কে জানে কী মন্দ ভাল’। বইটির লেখক রুবাইয়াত কাইমুম চৌধুরী। বইটির কাহিনী শুরু একজন পুলিশ অফিসারের মেয়েকে কিডন্যাপের করা দিয়ে। পুলিশ অফিসার রাশেদ যখন একটা এনকাউন্টার শেষ করে বাসায় ফিরে আসে তখন দেখে তার মেয়ে তার ঘরে নেই । তাই বউ গেছে এক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেতে । পুরো বাসায় মেয়ে ছিল একা । এই ফাঁকে একজন এসে মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে। 

রাশেদকে নিজের মেয়েকে পাগলের মত খুজতে শুরু করে। কিন্তু কিডন্যাপারের টিকিটাও খুজে পায় না । এদিকে কিডন্যাপার রবিনের রয়েছে আরামে । ঢাকা শহরের একজন প্রভাবশালী পুলিশ অফিসারের মেয়েকে সে তুলে নিয়ে এসেছে । সব কিছু সে পরিকল্পনা করেছে দুই বছরের বেশি সময় ধরেই সে রাশেদের উপর নজর রাখছে। কোন কাজটা কিভাবে করতে হবে সব কিছু পরিকল্পনা করেছে। তারপর তার মেয়েকে তুলে নিয়ে এসেছে।

কিডন্যাপার রবিন রাশেদের কাছে কোন মুক্তিপন চায় না । মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার বদলে রাশেদ বেশ কিছ কাজ করতে হবে । আরও ভাল করে বললে বেশ কয়েকজন কে খুন করতে হবে । সেই তালিকাতে রয়েছে তারই ডিপার্টমেন্টেরই বস । যদি সে খুন না করে কিংবা কাজে ব্যর্থ হয় তাহলে তার মেয়ের লাশ পাবে ।

দীর্ঘ ১৮ বছরের জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রাশে আস্তে আস্তে কিডন্যাপারের দাবী পুরণ করতে থাকে । এদিকে খুনের তদন্তে নামে তারই সহকারী যাকে সে নিজের হাতেই কাজ শিখিয়েছে। গল্পটা ঠিক দুই পক্ষ নয় বরং তিন পক্ষ নিয়ে এগিয়ে চলে । শেষ পর্যন্ত আসলে কে জেতে? রাশেদ কি কিডন্যাপারের সব দাবী পূরণ করে নিজের মেয়েকে রক্ষা করতে পারে? নাকি তার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পরে যায় আর অন্য দিকে রবিন আসলে কেন ঐ লোকগুলোকে খুন করতে চায় ? এর ভেতরে আসল কারণ কী?

থ্রিলার বই হিসাবে বইটা বেশ ভাল বলা যায়। থ্রিলার বইয়ের অন্যতম একটা ভাল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গতি। এই বইটা সেই হিসাবে চমৎকার । আমি এক বসাতেই বই পড়ে শেষ করে ফেলেছি । পড়তে গিয়ে কোথাও বিরক্তি আসে নি। তবে বই পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে লেখক বইয়ের ঘটনা গুলো যেন খুব বেশি সরল করে ফেলেছেন । গল্পের মূল চরিত্র সব পারে, কোন কিছুই তার অসাধ্য নয় এমন। পড়ার সময়ে আমার মনে হয়ে যে আসলেই কী এতো সহজে ব্যাপারটা হয় । পুলিশের হেডকোয়ার্টারে একজন বোম নিয়ে চলে যাবে এবং সেই বোমা ফাঁটিয়ে বড় অফিসারকে মেরে ফেলবে ! এটা কী এতোই ছেলে খেলা ! একজন পুলিশ অফিসারের বাসায় এতো সহজে কেউ ঢুকতে পারে । আবার যেখানে তার মেয়ে কিডন্যাপ হয়েছে কিডন্যাপার কিভাবে সেই আসায় ঢুকে পড়ল এতো সহজে ! এতো সহজেই ড্রাগ অপারেশন সম্পন্ন হয়ে যায় ! এছাড়া আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে পুরো বইটা নাম পুরুষে লেখা হলেও দুই তিন জায়গায় লেখক উত্তম পুরুষে বর্ণনা দিয়ে ফেলেছেন । এটা ব্যাপারটা আমার খুবই দৃষ্টি কটু লেগেছে । পরের সংস্করণে এটা অবশ্যই ঠিক করে নেওয়ার পরামর্শ রইল। 

সব মিলিয়ে টাইম পাস মূলক বই । হালকা মেজাজে বইটা পড়ে শেষ করে ফেলতে পারবেন । 



বইয়ের নাম

কে জানে কী মন্দ ভাল

লেখক- রুবাইয়াত মাইমুম চৌধুরী

থ্রিলার

মোট পাতা সংখ্যা ১১১

স্ব অ থেকে প্রকাশিত