মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিনের বইঃ ঢাবাকা

 যারা থ্রিলার গল্প পড়তে ভালোবাসেন তাদের কাছে এবার বইমেলায় অন্যতম আকর্ষীয় অপেক্ষার নাম ছিল ''ঢাবাকা'' । মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন তাদের কাছে খুবই পরিচিত নাম । তার বই মানেই অন্য কিছু । 

যদিও ঢাবাকাকে বলা হয়েছে গ্রাফিক নোভেল তবে আদতে আসলে সেটা তেমন কিছু নয় । বিশেষ করে গ্রাফিক নোভেল বলতে আমরা যা বুঝি এই বইটা তেমন নয় । আমরা বাইরের দেশে গ্রাফিক নোভেলে যেমনটা দেখি এই বইতে ছবি গুলো আসলে তেমন কিছু নয় । দৃশ্যের বর্ণনার পাশাপাশি সেই দৃশ্য সম্পর্কিত একটা ছবি আঁকা রয়েছে পাতায় । আমরা একটা যেমন একটা চরিত্র পড়ে তার চেহারা নিজে নিজে কল্পনা করে নিতাম ।

এই বইয়ের বেলাতে তেমন কিছু করতে হয় । মুখের কিংবা দৃশ্যের একটা চিত্র একে দেওয়া হয়েছে যা আমাদের সাহায্য করবে গল্পটা আরো ভাল ভাবে উপভোগ করতে । 


এবার আশি গল্প নিয়ে । ঢাবাকা আসলে একটা শহরের নাম । এই শহর কল্পনার শহর । যে শহরের সব কিছুই লেখকের কল্পনার আদতে তৈরি । বইয়ের শুরুতে ঢাবাকার একটা আলাদা ম্যাপ একে দেওয়া আছে । সেখানে নানান স্থানের নামও রয়েছে । তবে এটা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না বাস্তবের চিরো পরিচিত শহরের আদলেই সেই শহর গড়ে উঠেছে । 


গল্প শুরু হয় একটা লাশকে শশানে পোড়ানো দিয়ে । গল্প প্রথমে বর্ণনা হয় উত্তম পুরুষে । সে একজন কন্ট্যাক্ট কিলার । তাকে কন্ট্যাক্ট দেওয়া হয়েছে একজনকে খুন করে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলার জন্য । আর লাশ গায়েব করার ক্ষেত্রে সেটাকে পুড়িয়ে ফেলার থেকে ভাল উপায় আয় হয় না । শহর থেকে দুরে একটা শ্বশানে লাশ নিয়ে আসা হয় । ব্যাপারটাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে সাথে একজন নাটক দলের কর্মীকেও নিয়ে আসা হয় কাঁন্নাকাটির জন্য ।


পুরো কাহিনী এই শ্বাসনেই শেষ হয় । তবে কাহিনীর বিস্তৃতি পুরো ঢাকাবা জুড়েই । এখানে আসা প্রতিটি চরিত্রের পেছনের গল্প আস্তে আস্তে বর্ণনা করা যায় যেমন শ্বশানে যে মরা পোড়ায় সেই চন্ডাল । সে কিভাবে চন্ডাল হল কিভাবে এখানে এসে হাজির হল তার গল্প । কান্নার জন্য যাকে ভাড়া করে আনা হয়েছিলো সেই পরিমলের জীবনের কাহিনী । পরিমলের বউ সেজে আসা সেই আটোসাটো পোশাক পরা মেয়েটি কিভাবে এই ঢাবাকায় নিজের শুরু করলো । সাথে পাণ্ডবদা যে কিনা একটা খুনী ক্লাব চালায় । অদ্ভুদ কঠিন নিয়ম সেই ক্লাবের যা কোন খুনী ভাঙ্গতে সাহস করে না ।  সেই আণ্ডবদাই বা কিভাবে একজন সাধারণ বেবি চালক থেকে এই খুনী হয়ে বসলো একে একে সব গল্প বর্ণনা করা হয় । গল্প যখন শেষ হয় তখন আপনি বুঝটে পারবেন যে পুরো বইয়ের প্রতিটি চরিত্র একে অন্যের সাথে কিভাবে জড়িতো । 


নাজিম উদ্দিনের লেখা নিয়ে আসলে কিছু বলার নেই । তার লেখা মানেই অন্য কিছু । সেই শুরু থেকে তিনি যে নিজের ব্যাপারে যে একটা মানদণ্ড ধরে রেখেছেন সেটা এই লেখাতেও দেখতে পাবেন । 



বইয়ের নাম ঢাবাকা 
লেখক মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন