পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বুড়ো নদীটির পায়ের কাছে

 বইটির নাম একটু অদ্ভুত । বুড়ো নদীটির পায়ের কাছে । আসলে এমন নামটা কেন দিয়েছে সেটা আমি নিজেও বুঝতে পারি নি । বইটা কিনেছিলাম বইয়ের প্রথম অংশ পড়েই । গল্পের প্লটটা বেশ ইন্টারেস্টিং । গল্পে বুয়েটের একজন ছাত্র একটি দারুন বিষয় আবিষ্কার করে । মানুষ কিছু চিন্তা করবে সেটা কম্পিউটার স্ক্রিনে লেখা উঠে যাবে । এই ব্যাপারটা নিয়েই কথা বলতে সে যায় চট্রগ্রামের একজন প্রোফেসরের কাছে । প্রোফেসরের নাম ড. জামাল নজরুল ইসলাম ।

ডক্টর অব দ্য ডক্টরস নামে তিনি পরিচিত । নাদিম নামের ছেলেটি সকাল বেলা হাজির হয় তার বাসায় । বৃদ্ধ প্রফেসর মন নিয়ে নাদিমের কথা শোনে এবং তাকে উৎসাহ দেয় । নাদিমের পেপারস নিয়ে জামাল নজরুল গিয়ে হাজির হয় তার বন্ধু স্টেফিন হকিংসের কাছে । তারাও নাদিমের পেপারস পরীক্ষা করে এবং তারাও মনে করে যে এটি করা সম্ভব। কিন্তু এতে প্রচুর অর্থের দরকার যেটা তাদের হাতে আপাতত নেই । 

এরই মাঝে জামাল নজরুল ইসলাম মারা যান । নাদিম কিছুটা হতাশ হয়ে যায় । কিন্তু তাকে অবাক করে তার সাথে এক আমেরিকান কোম্পানির লোক যোগাযোগ করে । তাকে নিয়ে চলে যায় আমেরিকারে । ম্যাক্সিকোর কোল ঘেষা এক শহরে নির্জনে নাদিম গবেষণা করতে থাকে তার থট টু স্পিচ প্রোগ্রাম নিয়ে । তাকে বলা যায় গবেষণা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সে কারো সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে পারবে না । পুরো বিশ্ব থেকে তাকে আলাদা করে ফেলা হয় । কেবল মাত্র বার্তা বাহকের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় । কিন্তু অন্য দিকে রাইভাল কোম্পানীর লোকজনও নাদিমের খোজ করতে উঠে পড়ে লাগে । তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোথায় রাখা হয়েছে সব কিছু । শুরু হয় দুই কোম্পানীর ভেতরে একটা ঠান্ডা যুদ্ধ । 

এবং এক সময়ে রাইভাল কোম্পানী ঠিক ঠিক নাদিমের খোজ পেয়েও যায় । তবে তারা নাদিকে তুলে নিয়ে আসার বদলে অপেক্ষা করতে থাকে । যখন নাদিম তার গবেষণা শেষ করবে এবং পেপার্স রেডি হবে । এক সময়ে নাদিমের কাজ শেষ হয়ে যায় । রাইভাল কোম্পানি তাকে তুলে নিয়ে আসার সকল পরিকল্পনা শেষ করে কিন্তু তার আগেই আরও একদল গিয়ে সেখানে হাজির হয় ! 


নাদিম কি শেষ পর্যন্ত তার মায়ের কাছে পৌছাতে পারবে ? 


থ্রিলার বই আমার পছন্দ যদি সেই গল্পে গতি থাকে । খুব বেশি জটিল করে লেখা হয় নি বইটা । এবং খুব সুক্ষ ভাবেও লেখা হয় নি । মানে হচ্ছে খুনি নাটি বিষয় গুলোর খুব বেশি বর্ণনা দেওয়া হয় নি । কাহিনী এগিয়ে গেছে খুব দ্রুত যা গল্পটাকে আরও সাবলিক করে তুলেছে । শান্ত বিকেলে সময় কাটানোর মত বই হচ্ছে এটা । পড়ার পরামর্শ রইলো ।

 


বইয়ের নাম বুড়ো নদীটির পায়ের কাছে । 

লেখক বাদল সৈয়দ 

বাতিঘর পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত ।