পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ চাঁদের উল্টোপিঠ

 চাঁদের উল্টোপিঠ নিয়ে কিভাবে লেখা শুরু করবো ঠিক বুঝতে পারছি না । তৃথা আনিকার বই নিয়ে লিখতে গেলেই আমার কেবল এমন টা অনুভব হয় । কোথা থেকে শুরু করবো আর কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারি না ।  গল্পের শুরু হয় পুলিশ অফিসার ইকবাল তানভীরকে নিয়ে । তাকে একজন মন্ত্রী ডেকে পাঠান । ইকবালের কাছে মনে হয় যে মন্ত্রী সাহেব তাকে কোন রিপোর্ট বদলানোর জন্য বলবেন । কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায় যে মন্ত্রী সাহেব চাচ্ছেন যেন ইকবাল তার সাথে বিদেশ যায় । কদিন পরে সে চিকিৎসার জন্য যাবে তার সাথে সিকিউরিটি হিসাবে ইকবাল যেন যায় । 


অন্য দিকে ইকবালের মোবাইলে নিয়ানা নামের একজন মেয়ে প্রতি নিয়ত ফোন করে গালী দিয়ে যাচ্ছে । ইকবাল যেন তাকে বিয়ে না করে সেই কথা বলে যাচ্ছে অথচ ইকবাল কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবছে না । নিশ্চয়ই কোথায় ভুল হচ্ছে । সত্যি বড় ভুল হয়েছে । লিয়ানার বাবা লিয়ানার জন্য ছেলে ঠিক করেছেন । কিন্তু লিয়ানা এখন বিয়ে করতে চায় না । তার অনেক স্বপ্ন । সে বাইরে যাবে পড়তে । এখন বিয়ে করতে গেলে তার সে স্বপ্ন সত্যি হবে না । তাই তার ফুপু ইকবালের খোজ বের করেছে এবং লিয়ানা তাকে জ্বালাতন করে যাচ্ছে । 


এক পর্যায়ে তারা দেখা করতে চায় । দেখা করতে যায় ইকবাল এবং তার বন্ধু শাহীন । ইকবাল শাহীনকে রেস্টুরেন্ট নামিয়ে বলে যে লিয়ানার সাথে আপাতত কথা যেন বলে তারপর সে এসে যোগ দিবে । কিন্তু সেখানে এমন কিছু ঘটে যে শাহীনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় । সেখানেই ইকবাল আর লিয়ানার দেখা হয় । এবং প্রথম দেখাতেই দুজন দুজনকে পছন্দ করে । লিয়ানা প্রবল ভাবে ইকবাল তানভীরের প্রেমে পড়ে যায় । 


বাসায় এসে বাবাকে জানায় যে সে বিয়েতে রাজি । এক সময় বিয়ে হয়েও যায় কিন্তু তখনই লিয়ানা বুঝতে পারে কোথায় খুব বড় একটা ভুল হয়ে গেছে । অনেক বড় ভুল । অন্য দিকে লিয়ানার সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকে ইকবালের জীবনেও খুব বড় একটা পরিবর্তন আসে । ওর জীবনের যত বড় সমস্যা ছিল সেগুলো আস্তে আস্তে সমাধান হয়ে যায় এবং সুন্দর একটা সমাপ্তির দিকে যায় । কিন্তু তার পরেও একটা না পাওয়া একটা অপূর্ণতা যেন র‌য়েই যায় ।



বইটা পড়ে সবার মনে হবে যেন হ্যাপি এন্ডিংয়ের একটা বই । সত্যিই হয়তো তাই ই কিন্তু আমার কাছে বইটা পড়ে একটা তীব্র কষ্টই হয়েছে । বারবার কেবল মনে হয়েছে যে কেন শেষ পর্যন্ত এমন হল ! নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে না পাওয়ার যে তীব্র কষ্ট, হোক সেটা বানানো কোন চরিত্র, তবুও কলেন কেউ এই কষ্ট পাবে! কারো এই কষ্ট পাওয়া ঠিক না । কেউ যাতে এমন কষ্ট না পায় কোন দিন । আমার লিয়ানার জন্য কষ্ট হতে থাকে, আমার ইকবালের জন্য কষ্ট হতে থাকে । 


তৃথা আনিকার লেখা নিয়ে আমি কিছু বলতেই পারি না । তার লেখা আমাকে সব সময়ই মুগ্ধ করে রাখে, এই বইতেও তাই । এর বাইরে আর যাই বলি না কেন সেটা কখনই মন মত হবে না । তাই নাই বলি । তার লেখা আপনারা পড়লেই বুঝতে পারবেন !