তিনটি ভৌতিক গল্পের বইঃ লঞ্চঘাটের প্রেতাত্মা, রুম নম্বর ৩৮ , ভৌতিক ব্যালকনি

বইয়ের ভেতরে আমার ভুতের বই সব থেকে পছন্দের সেটা ছোট গল্প কিংবা উপন্যাসই হোক । প্রতিবার মেলা থেকে আমি এই ভুতের গল্পের বই ই বেশি কিনি। আজকের বইয়ের নাম হচ্ছে লঞ্চ ঘাটের প্রেতাত্মা । বইয়ের কাহিনীটা একটা আবাসিক হোটেলকে কেন্দ্র করে । অনেক বছরের পুরানো লঞ্চঘাট । তার পাশেই একটা আবাসিক হোটেল । নাম ''মায়া মঞ্জিল''। হোটেলটা বেশ জমজমাট । তবে

হোটেলের একটা ভয়ংকর ইতিহাস রয়েছে । এই হোটেলেরই একটা ঘরে হোটেল মালিকের ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় । ঘরটা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল, আর তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি, তাই কিভাবে সে মারা গেল সেটার কোন ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারে নি । সেই ঘরেই এখন থাকে হোটেলের কেয়ার টেকার জামাল মিয়া । 



তবে কদিন থেকেই জামাল মিয়া ঘুমিয়ে ঠিক শান্তি পায় না । কারণ রাতের বেলা কে জানি তার নাম ধরে ডাকে । কে জানি হোটেলের গেটের কাছে দাড়িয়ে থাকি, হোটেলের ভেতরে ঘোরাফেরা করে । একদিন জামাল মিয়ে এমন একজনের পিছু নিলে সে এক লাফে হোটেলে উচু দেওয়া পার হয়ে চলে যায় ধানক্ষেতের দিকে । একটা কাককে প্রায়ই দেখা যায় । হঠাৎ সে আসে আবার হঠাৎই চলে যায় । তার যাওয়া আসার কোন শব্দ পর্যন্ত পাওয়া যায় না । 

গল্পের আরেকটা রহস্যময় চরিত্র হচ্ছে আয়নাল সরদার । তার চলাচল কথা বার্তাও রহস্যময় । কখন সে হোটেলে আসে আর কখন চলে যায় সেটাও ঠিক মত ঠাওর করতে পারে না জামাল মিয়া । গল্পের শেষ পর্যন্ত কী হয় ? গেটের কাছে দাড়িয়ে থাকা লোকটা আসল কে ? কী তার পরিচয় ? আর কেনই বা সে এই হোটেলে আসে বারবার ! এই সব প্রশ্নের জবাব কী শেষে পাওয়া যাবে? 


এই হচ্ছে বইয়ের কাহিনী । ভুতের গল্প হিসাবে প্লট ভাল । তবে লেখকের লেখায় জোর কম । লেখক সাবলিল ভাবে বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে তবে একটু যেন বেশি বর্ণনা করা হয়েছে । আর একেবারে শেষের ফিনিশিংটা আমার কাছে ভাল লাগে নি । আবার হতে পারে এই বইয়ের আরেকটা সিক্যুয়াল আসবে । যদি সিক্যুয়াল আসে তাহলে অবশ্য ঠিক আছে । টিভি সিরিজ গুলোর এক সিজন যেভাবে শেষ হয় এই বইটার শেষটাও যেন তেমন মনে হল । যদিও রহস্যের সমাধান হয়েছে কিন্তু হোটেলকে ঘিরে যে সমস্যা চলছিলোস সেটার কোন সমাধান না করেই বইটা শেষ হয়েছে । 


বইয়ের নাম লঞ্চঘাটের প্রেতাত্মা 

লেখক ইকবাল খন্দকার ।



এরপরের বইটার নাম রুম নম্বর ৩৮ । এটা একটা ভুতের গল্পের বই । গল্পে মোট সাতটা ভুতের গল্প রয়েছে । পড়তে বেশ মজাই লেগেছে । এক বৈঠকে পড়ে শেষ করার মত বই এটা । গল্প গুলো আমারদের বাংলা সাহিত্যের চিরায়িত ভুতের গল্পের আদলে লেখা । 

বইয়ের নাম রুম নম্বর ৩৮ । 

লেখকের নাম মোরশেদ আলম হৃদয়


শেষ বইটার নাম ভৌতিক ব্যালকনি । এটাও একটা ভুতের গল্পের বই । এখানে মোট আট টা গল্প রয়েছে । এই বইটাও আগের বইটার মতই । এক বৈঠকে পড়ে শেষ করার মত বই । একই প্রকাশনী থেকে কেনা দুটো বই । বইয়ের সাইজও একই রকম । ধরনও একই রকম । সময় কারানোর জন্য চমৎকার ।

বইয়ের নাম ভৌতিক ব্যালকনি । 

লেখক ফেরারী মুরাদ