মনির সাহেবের তেলেসমাতি কাণ্ড

 কেউ বই লিখে বিখ্যাত হয় আবার কেউ বিখ্যাত হয়ে বই লিখে । নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়ে নিজ কাজের ব্যাপারে বইটা লেখাটা নতুন কিছু নয় । কিন্তু সমস্যা হয় যখন বিখ্যাত হওয়ার পরে নিজের ক্ষেত্র থেকে সরে এসে সাহিত্য চর্চা করে তাহলেই হচ্ছে সমস্যা । আর এই ইউটিউব ফেসবুকের কল্যানে আজকাল যে কেউই বিখ্যাত হয়ে যেতে পারে । কিন্তু সমস্যা হয় যখন সেই বিখ্যাত হয়ে যাওয়া মানুষটা ভাবতে শুরু করে যে আমি যেহেতু বিখ্যাত হইছি তাই একটা বই লিখে ফেলি । গতবছর অন্তিক মাহমুদের ''চল'' বই পড়ে আমার এই মনভাব হয়েছিলো। এইবার ''মনির সাহেবের তেলেসমাতি কাণ্ড'' পড়েও একই মনভাব হয়েছে । বইয়ের লেখক

আসাদুল্লাহ আতিক । ফেসবুকে সে আতিক ভাই হিসাবে পরিচিত । সে একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর । তার কয়েকটি ভিডিও আমি দেখেছি । বেশ মজার করেই সে ভিডিও বানায় । তার ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা অনেক বেশি । আমি নিশ্চিত এই বই অনেক বিক্রি হবে । এবং হয়েছে । তার ফ্যান টা মারাত্মক চমৎকার বলে রিভিউও দিবে । 



বইয়ের প্রধান চরিত্র আতিক সাহেব একজন ব্যাংকার । কিন্তু তিনি হতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানী । বাবার কারণে হতে পারেন নি । কিন্তু তাই বলে তার বিজ্ঞান চর্চা থেমে থাকে নি । একের পর এক নানান বুদ্ধি তার মাথায় খেলা করে । যেমন একবার তিনি ভাবলেন যে মশাদের ন্য ব্লাড ব্যাংক তৈরি করবেন যাতে করে মশা আর শরীরে না কামড় দেয় । এই বইয়ের গল্প হচ্ছে সে ভেবে ভেবে চিন্তা করেছে যে পেটের গাছ লাগাবে এবং সেই গাছ বড় হয়ে ফল দিয়ে শরীরের ভেতরেই পুষ্টি যোগাবে । তাহলে আর বাইরে থেকে বাড়তি খাওয়া দাওয়া লাগবে না । এই হচ্ছে গল্পের থিম । 

সত্যি বলতে এটা একটা গল্প হলেই বরং ভাল হত । অপ্রয়োজনীয় ভাবে সেটা টেনে টুনে বই বানানো হয়েছে । বই শেষ করার মনে হল আমাদের দেশে এখন সস্তা হাসির নাটক গুলো তৈরি হয়, এই বইয়ের কাহিনীটাও সেই রকম । খানিকটা জোর করে মানুষকে হাসানোর চেষ্টা । অবশ্য বইয়ের টার্গেট গ্রুপ সম্ভবত স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা। তাদের কাছে অবশ্য এই গল্প খুব হাজির মনে হতে পারে । আমার কাছে বই শেষ করে তৃপ্তি তো আসেই নি বরং বিরক্তি এসেছে । টাকা আর সময় নষ্ট ।  


মনির সাহেবের তেলেসমাতি কাণ্ড

লেখক আসাদুল্লাহ আতিক