লোলার জগৎ বইটার ফার্স্ট ভার্শন আমার পড়া হয়েছিলো অনেক আগেই । তখন সেটা কেবলই র কপি ছিল । সেই সময়েই গল্পের প্লট টা এতো চমৎকার লেগেছিলো যে বলার অপেক্ষা রাখে না । এবার পুরো গল্পটা বই আকারে পড়ে আরও বেশি চমৎকার লাগলো । গল্প এখানে আরও পরিপূর্ণ এবং আরও চমৎকার ।
মানুষ তার জ্ঞানের প্রান্তিক সীমাতে পৌছে গেছে । এর থেকে বেশি জ্ঞান অর্জন মানুষের পক্ষে আর সম্ভব না । এমনই এক সময়ে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে এক ভয়ানক বিপদ । যা পৃথিবীতে নিয়ে প্রায় দশ হাজার বছরের এক অন্ধকারের সময়ে । পৃথিবীকে ঘিরে বিরাজ করবে এক ঘন ধূলার ঝড় যা সূর্যের আলো আসতে দিবে না পৃথিবীতে । সব কিছু জমে ঠান্ডা হয়ে যাবে । মানুষের সব প্রযুক্তি অচল হয়ে যাবে । মারা যাবে প্রায় সব মানুষ । পৃথিবীতে নিশ্চিত হয়ে যাবে মানব সভ্যতা । এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য পৃথিবীবাসীর হাতে সময় মাত্র ২৬ বছর । ঠিক ২৬ বছর পরে এই অন্ধকার যুগ শুরু হবে । এই অল্প সময়ের ভেতরে পৃথিবী বাসী কি পারবে এই বিপদ হতে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় বের করতে?
পৃথিবীর শ্রষ্ঠ বিজ্ঞানীরা কাজে গেলে যায় । প্রতিদিন শত শত প্রজেক্ট এসে হাজির হয় বিজ্ঞান কাউন্সিলের কাছে । কিন্তু তার সবই বাতিল হয়ে যায় । কোন যুতসই সমাধান পাওয়া যায় না । ঠিক এই সময়ে প্রফেসর আকিরা এসে হাজির হয় । তার টাইন ডলিউশনের থিউরি নিয়ে । তিনি ব্যাখ্যা করেন যে বর্তমান মানুষের যে জ্ঞানের পরিধি তাকে বর্তমান সমস্যার সমাধানের কোন প্রযুক্তি পৃথিবীবাসীর হাতে নেই এবং এই ২৬ বছরে সেটার সমাধান বের করাও সম্ভব না । কিন্তু যদি এই সমস্যাটাই আরও দুই হাজার বছর পরে এসে হাজির হয় তাহলে কি হত? এই পৃথিবী বাসীর বর্তমান জ্ঞান এবং সেই সাথে আরও দুই হাজার বছরের জ্ঞান গবেষণা যুক্ত করে হয়তো কোন একটা সমাধান তৈরি সম্ভব হত ।
এই লক্ষ্যেই মঙ্গলের একটা উপগ্রহ লোলাতে তৈরি হয় আরেকটা ছোট পৃথিবী । পৃথিবী থেকে সেরা পাঁচ হাজার মানুষকে নিয়ে লোলাতে শুরু হয় নতুন জীবন । একক ভাবে পৃথিবীর স্বার্থ রক্ষাই হচ্ছে লোলার প্রধান সংবিধান । কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে থাকে না । লোলা যখন সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলো তখন লোলার ভেতরেই একটা দল লোলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করতে উঠে পড়ে লাগে যার বীজ শুরু হয়েছিলো স্বয়ং পৃথিবীতেই ।
অন্য দিকে পৃথিবী বাসীও বসে নেই । তারাও নিজ নিজ ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যায় এই বিপদ থেকে উদ্ধারের । লোলা প্রজেক্টের মতই হাতে নেওয়া হয় প্রজেক্ট হেতেব । অন্য ভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলে । কিন্তু সেই চেষ্টা কি সফল হয় নাকি পৃথিবীর উপর আরও নতুন ভাবে বিপদ ডেকে আনে ?
লোলার জগতের প্রথম পান্ডুলিপি যখন পড়েছিলাম তখন বইট একেবারে র একটা লেখা ছিল কিন্তু বই আকারে বের হওয়ার পরে পূরিপূর্ণ জমজমাট এক সায়েন্স ফিকশনে পরিনত হয়েছে । যারা সায়েন্স ফিকশন পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য একটা মাস্ট রিড বই এই লোলার জগৎ ।
বইয়ের নাম লোলার জগৎ
লেখক মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
বাতিঘর থেকে প্রকাশিত
পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩০৪