পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ অন্য জীবনের স্বাধ ও বাস স্টপে কেউ নেই

প্রথমটা হচ্ছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "অন্য জীবনের স্বাধ" ।
সুনীল ক্লাসিক । সাধারন এক মধ্যবিত্ত চাকুরের জীবনে হঠাৎ করে এসে হাজির হয় অন্য এক জীবন । গল্পের প্রধান জহর একটা কোম্পানীর মেকানিক হিসাবে কাজ করে । তার বাবার এক দুর সম্পর্কের কাকা এবং কাকী সমাজের উচু শ্রেণীর মানুষ । অনেক টাকা পয়সা । তার অফিসের ঠিক কাছেই তাদের বাসা । একদিন সেই বিল্ডিংয়ের একটা কাজ শেষ করে কি মনে করে জহর গিয়ে হাজির হয় তাদের বাসায় । তারা বড় আন্তরিক ভাবে জহর কে কাছে চেনে নেয় । তারপর থেকে নিয়মিতই তাদের বাসায় যাওয়া হয় জহরের ।
সেখানে নতুন সব মানুষের সাথে জহরের পরিচয় হয় ! শ্রেয়া নামের একটা মেয়ে আসে আর তার ভেতরে তার এক কলেজ জীবনের বন্ধু আখিলও আসে সেখানে । জীবনটাকে জহর নতুন ভাবে চিনতে শুরু করে । নতুন করে উপলব্ধি করতে শুরু করে । সে বুঝটে শুরু করে যে জীবন মানে কেবল সংসারের ঘানী টানাই নয় আরও অনেক বড় কিছু !
ঠিক এমন সময়েই তার জুলি কাকী মা খুন হয়ে যায় । গল্পের মোড়খানিকটা ঘুরে যায় । পুলিশ খুব দ্রুতই কেসটা সমাধান করে বলে দাবী করে বটে কিন্তু জহর আর শ্রেয়া বলে যে পুলিশ ভুল মানুষকে ধরেছে । জহর নিজে খুজে বের করে আসলে কে খুনটা করেছে ।
বইটা প্রথম প্রথম পড়তে গিয়ে আমার একটু বিরক্ত লাগলেও মাঝ পথে এসে বেশ চমৎকারই লেগেছে । তারপর আগ্রহ নিয়েই শেষ করেছি ।

দ্বিতীয় বইটার নাম "বাস স্টপে কেউ নেই"
এটাকে ঠিক উপন্যাস না বলে বড় গল্প বলাই ভাল । গল্প দুইটা পরিবার । মধ্যবয়সী ২ জোড়া দম্পতীকে নিয়ে এই গল্প । দেবাশিস-চন্দনা এবং শচীন-তৃণা । দেবাশিসের সাথে তৃণার একটা প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়ে ওঠে ।
দেবাশিষ এক সময়ে প্লেবয় ছিল । তার অনেক প্রেমিকা ছিল । তার ভেতরে চন্দনা ছিল একজন । তবে চন্দনাকে সে কাটাতে পারে নি । খানিকটা কৌশলেই বিয়ে করেছিলো । বিয়ের পর দেবাশিস বুঝতে পারে সে ভুল করেছে । দুরত্ব তৈরি হয় এবং চন্দনা আত্মহত্যা করে সাত তলা বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে । ওদিকে তৃণার জীবনটা দুর্বিসহ । স্বামী এবং সন্তানদের থেকে ক্রমেই দুরে সরে যায় । ছেলে মেয়েরা তাদের বাবাকে যতখানি ভালবাসে তার সাথে যত খানি আন্তরিক তৃণার সাথে নয় । ক্রমেই যেন অপরিচিত হয়ে ওঠে তাদের কাছে । তারপর এক সময় দেবাশিস এবং তৃণা কাছাকাছি চলে আসে । দেবাশিস পেশায় ইঞ্জিনিয়ার । তৃণাদের বাড়ি বানানোর সময় তাকে ডাকা হয়েছিলো । সেখান থেকেই দেবাশিস আর তৃণার পুনরায় দেখা হয় । এক সময় তৃণা আর দেবাশিষেরা একই এলাকাতে থাকতো । দেবাশিস অন্য সব মেয়েকে চিঠি দিলেও তৃণাকে কোন দিন পাত্তা দেয় নি ।

এই দুই ছোট পরিবার নিয়ে কাহিনী । খুবই ছোট পরিসরেই গল্পের শুরু হয় আবার ছোট পরিসরেই তা শেষ হয় ! খুব বিশেষ কিছু নেই বইতে । তবে ছোট বই হিসাবে পড়তে খারাপ লাগবে না আশা করা যায় !