পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ গতকাল

বইয়ের নাম "গতকাল'' । লেখক ইশতিয়াক আহমেদ ।
গল্পের কাহিনী শুরু মসজিদের মাইকে আদনানের মৃত্যুর খবর প্রচার দিয়ে । কিন্তু আদনান মরে নাই । সে হচ্ছে এলাকার ক্যাডার । তার মৃত্যুর খবর শুনলে একালার মানুষজন কেমন প্রতিক্রিয়া দেয় সেইটা দেখার জন্য এই কাজ করা ।



যাই হোক গল্পের তিনটা অংশ  এক হচ্ছে আদনান সে ক্যাডার । অনেক বছর আগে তার বাবাকে সাইদ কমিশনার এলাকা থেকে বের করে দিয়েছিলো । সেই বের করে দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে সে আসছে এলাকাতে । ক্যাডার হয়ে, তাকে এখন এলাকার সবাই ভয় পায় । তার মাথার উপর গডফাদার হাত আছে ।

আরেক চরিত্র হচ্ছে নিতু । নিতু একই এলাকাতে থাকে । আদনান তাকে পছন্দ করে । নিতু ল নিয়ে পড়ছে । প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিয়ে বসে আছে । তার মন কনফিউজড । সে আদনান কে পছন্দ করে আবার করে না । তার আবার আরেকজনকেও খানিকটা পছন্দ তার নাম হচ্ছে রায়হান । সেও একই এলাকাতে থাকে 

তিন নম্বর চরিত্র হচ্ছে রায়হান । পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ । সে নিতুকে পছন্দ করে । নিতুর বন্ধু শারমিনকে দিয়ে নিতুর জন্য ঔষধ কোম্পানীর প্যাড পেন ইত্যাদি পাঠায় ।

গল্পের কাহিনী কিছু আছে বলে আমি খুজে পাই নি । আদনান সাইদ কমিশনারের ভাগ্নের বাইক পুড়িয়ে দেয় কারন সে আদনানের মায়ের সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছিলো । সাইদ কমিশনার আদনান কে মেরে ফেলার জন্য লোক ঠিক করে কিন্তু পারে না । তখন আদনান তাকে খুন করার হুমকি দিয়ে আসে ।

এদিকে নিতুর সাথে আদনানের দেখা হয় । আদনানের কথা শুনে নিতু আদনানের প্রেমে পড়ে । তার কথা হচ্ছে জগতে সবাই ঠিক করলে চলবে কেন । সে না হয় একটু ভুলই করুক । এরপর এক সময় দেখা যায় সাইদ কমিশনার সত্যিই খুন হয় । কিন্তু আদনান তাকে খুন করে নি । তাহলে কে করেছে ? খুন করেছে আদনানের গড ফাদার । যেহেতু আদনান তাকে হুমকি দিয়ে এসেছিলো তাই পুলিশ আদনাদকে ধরে নিয়ে যায় । ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় নিতুর সাথে তার দেখা হয় । নিতুকে বলে সে খুব করে নি । নিতু বলে সে বিশ্বাস করতে চায় আদনানের কথা । সে তার জন্য অপেক্ষা করবে ।

এরপর কেটে যায় আরও আড়াই বছর । আদনানের কেস কেউ লড়তে চায় না । কেস নেয় ঠিকই কিন্তু মাঝ পথে কেস ছেড়ে দেয় । তারপর এক সময় একজন ঠিকই কেস হাতে নেয় এবং সে আর কেস ছাড়বে না এও নিশ্চয়তা দেয় ।
বলেন তো কেডা এই উকিল ?
গল্পে রায়হানের কথা কিছু বললাম না । কারন তার কথা কিছু বলার নেই । অপ্রয়োজনীয় এক চরিত্র । গল্প থেকে রায়হানের অংশ টুকু বাদ দিয়ে দিলে কেবল কিছু পৃষ্ঠা কমে যাবে । গল্পের কোন ক্ষতি হবে না ।

ইশতিয়াক আহমেদের ছোট গল্প গল্প আমার পছন্দ খুব । কিন্তু বরাবরের মত তার উপন্যাস বড় অখাদ্য হয় । এটাও তার ব্যতীক্রম নয়।  তার লেখা যতগুলো উপন্যাস আমি পড়েছি ততগুলোতেই আমার অনুভূতি আমার একই । তার লেখা উপন্ন্যাস প্রতিটির কাহিনীর প্লট থাকে অতি ছোট । পড়তে গেলে আমার কেবল মনে হয় যে লেখাটা সে জোর করে টেনে টেনে লম্বা করছে । সিনেমা হলের গলি, আদর্শলিপি, ল্যান্ডফোন প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমার মনভাব এই একই । না আছে কাহিনীর বিস্তার না আছে গভীরতা ! কেবল আছে হুমায়ুনী অনুকরণ ।
বাংলা সাহিত্যে কেবল হুমায়ুন আহমেদের গল্পের চরিত্র গুলো উল্টাপাল্টা কাজ করলে সেটা মানান সই হয় । অন্য কোন লেখক যখন তার এই একই কাজ করতে যায় তখন সেটা ভাড়ামী ছাড়া আর কিছু মনে হয়না । সে হুমায়ুন আহমেদ মত করে চরিত্র সৃষ্টি করতে সচেষ্ট থাকে । কাজটা সে ইচ্ছে করে নাকি আপনা আপনি চলে আসে আমি জানি না । তবে এই কাজটাই তার লেখাকে আরও মানহীন করে তোলে । প্রতিবার এই একই কাজ করে চলেছে ।

গতকাল । পড়তে সুপারিশ করবো না । যাই হোক পোস্টে একটা প্রশ্ন করেছিলাম । বলেতো উকিল টা কেডা?