পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ গোয়েন্ডি'স বাটন বক্স

গোয়েন্ডি'স বাটন বক্স গল্পটা লেখার পেছনের ইতিহাস হচ্ছে স্টিফেন কিং অনেক দিন ধরে একটা গল্পের কথা ভাবছেন কিন্তু কিছুতেই শেষ করতে পারছেন না । শেষ গল্পের কিছু অংশ লিখে সেটা পাঠিয়ে দিলেন রিচার্য চিযমারের কাছে । চিযমার সাহেবও কিছু অংশ জুড়ে দিয়ে সেটা আবার পাঠালেন স্টিফেনের কাছে । এভাবে বার কয়েক ঘুরলো । তারপরই এই গোয়েন্ডিস বাটন বক্স নভেলা লেখা শেষ হল । এই ভাবে একটা গল্প লেখা চমৎকার ব্যাপার । লাইক আমি একটা গল্পের একটু লিখলাম তারপর সেটা অন্যজন সেটুকু পড়ে নিজের মত করে আরও একটু লিখলো আবার পাঠালো আমার কাছে । মজার একটা ব্যাপার !

যাই হোক, গল্পটা কাহিনী বর্ণনা করি । বারো বছর বয়সী গোয়েন্ডি পিটারশন ক্যাসেল ভিউয়ের সুইসাইড সিড়িতে চড়ে গিয়ে সেখানে এক অদ্ভুত লোকের দেখা পায় । লোকটার নাম রিচার্য ফ্যারিস । সে গোয়েন্ডিকে একটা মেহগনি কাঠের বক্স উপহার দেয় । বাক্সটি বাদামী উজ্জল রংয়ের । একটা রাজকীয় ভাব আছে । বক্সটা প্রায় ১৫ ইঞ্জি লম্বা, ফুট খানেক চওড়া আর হাত ফুট খানেক গভীর, বাক্সের গায়ে দুটি সাড়িতে নানান ধরনের বাটন রয়েছে । রিচার্য ফ্যারিস তাকে নানান বাটন সম্পর্কে বলে । এই বাটন গুলো দিয়ে গোয়েন্ডি কি করতে পারে সেটাও বলে । লোকটা গোয়েন্ডিকে বলে এই পৃথিবীতে গোয়েন্ডি হচ্ছে খুবই বিশেষ একজন মানুষ । অনেক কিছু নির্ভর করছে তার উপর । তারপর গোয়েন্কেডি সে দিয়ে চলে যায় ।

গোয়েন্ডি বাক্সটা বাসায় নিয়ে আসার পর থেকে তার জীবনে নানান রকম পরিবর্তন আসতে শুরু করে । গোয়েন্ডির শরীর মোটা ছিল, এই জন্য তাকে অনেক অপমানের স্বীকার হতে হয়েছে । এই জন্যই সে সুইসাইড সিড়ি দিয়ে প্রতিদিন উঠতো, চকলেত পছন্দ হওয়ার স্বস্ত্বেও খেতো না । কিন্তু এই বক্স থেকে বের হওয়ার চকলেট খেতে শুরু করার পর থেকে সে সে ধীরে ধীরে চিকন হতে শুরু করে এবং এক সময়ে সে স্কুল/কলেজের সব থেকে সুন্দরী মেয়েতে পরিনত হয় । তার চোখে চশমা ছিল সেটাও এক সময়ে ভাল হয়ে যায় । গোয়েন্ডি হয়ে ওঠে সব থেকে ভাল ছাত্রী এবং খেলা ধুলাতেও সবার থেকে ভাল হয়ে ওঠে । গোয়েন্ডির বাবা মায়ের মাঝে ঝগড়া হত প্রায়ই, তারা এলকোহ্যালিক ছিল, বাটন বক্স আসার পর থেকে তাদের ঝগড়া বন্ধ হয়ে যায়, একে অন্যকে ভাল বাসতে শুরু করে এবং এলকোহল খাওয়াও বন্ধ হয়ে যায় । বলা যায়, একের পর এক সৌভাগ্য এসে গোয়েন্ডির জীবন ভরে যেতে শুরু করে । তবে কক্সটার ভেতরে আছে ভয়ানক ধ্বংশাত্বক ক্ষমতা । একবার  গোয়েন্ডি একটা বাটনে চাপ দিয়ে খুব বড় একটা ধ্বংশ ডেকে নিয়ে আসে । এছাড়াও এই বক্স ব্যবহারের ফেলে গোয়েন্ডির জীবনে একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটে । এই নিয়েই মূলত কাহিনী । কাহিনী শুরু হয়েছিলো গোয়েন্ডির যখন বারো বছর বয়স তখন থেকে আর শেষ হয় গোয়েন্ডি যখন জীবনে অনেক সফলতা পেয়েছে । মিস্টার রিচার্ড আবার এক সময় তার জীবনে হাজির হয় । তখন গোয়েন্ডি কি সেই বক্সটা দিয়ে দেয় নাকি দিতে চায় না ? সেটা গল্প পড়ে জানা যাবে । সব কিছু বলে দিলে গল্প পড়ার মজা থাকবে না ।

গল্প আমাকে মোটামুটি লেগেছে । তবে অনেকের কাছেই হয়তো এই গল্প ভাল নাও লাগতে পারে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে গল্পের ভেতরে গভীরতা একদম কম । চমকের অভাব । যদিও এই গল্পটা লেখার পেছনের ইতিহাতটা চমৎকার তবে গল্প মোটেই জমজমাট হয় নি । পড়ার দরকার পড়েছি টাইপ । নভেলা বিধায় পড়তে খুব বেশি সময় লাগে না । তাই হয়তো লেখা পড়ে শেষ করা গেছে দ্রুত । অনুবাদকের মান মোটামুটি । আরও একটু সাবলীল হলে ভাল হত । তবে প্রথম কাজ হিসাবে ওকে ।

গোয়েন্ডি'স বাটন বক্স
লেখক স্টিফেন কিং  ও রিচার্ড চিযমার
অনুবাদ সুমিত শুভ্র
আফসার ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত