কালবীর- আবির্ভাব

গল্পের কাহিনী এগিয়েছে বেশ কিছু টাইমলাইনে, বেশ কিছু সময়ে । গল্পের শুরু হয় মিতুলকে দিয়ে । স্কুলের পিকনিক থেকে ফেরার সময়ে তাদের বাস এক্সিডেন্ট করে । বাসে থাকা তার ক্লাসের অন্য সবাই মারা পড়লেও মিতুল বেঁচে যায় । তাকে একজন রক্ষা করে । একজন রহস্যময় মানুষের মত দেখতে কিছু একটা । তার থেকেই সে মিতুলের সাথেই থাকে । মিতুলকে নানান কিছু দেখায় ।
মিতুলের শরীরে যে হাত দেয় তাকেও নিয়ে যায় অন্য কোন ঘটনার সময়ে । শায়লাকে দেখিয়েছিলো শাহেদ চলে এসেছে বাসায় অথচ শাহেদ তখনও অফিসে। কবীর স্যারকে নিয়ে তার স্ত্রীর আত্মহত্যার সময়ে । সাইক্রায়াটিসকে নিয়ে যায় সেই অতীতে । এই সবই করে মিতুলের সাথে থাকা সেই কালবীর ! গল্পের শুরুতেই মনে হবে বুঝি সেই বাস দুর্ঘটনার থেকেই কালবীর রয়েছে মিতুলের সাথে তবে কাহিনী একটু সামনে এগোলে দেখা যায় যে সে কেবল মিতুলের সাথেই ছিল না, সে মিতুর বাবা শাহেদ এবং তার দাদী ফাল্গুনীর সাথেও । 

আরও ভাল করে বললে কাহিনী শুরু হয় এই ফাল্গুনী থেকেই । ফাল্গুনী এবং তার প্রোফেশর সুলতান আহমেদ জুয়েল এবং আরও তিনজন এসিস্ট্যান্ট মিলে রিসার্চ করছিলো কিছু একটা জটিল বিষয় নিয়ে । কিন্তু একদিন সে ল্যাবে একটা দূর্ঘটনা ঘটে । সেখানেই ফাল্গুনীর সামনে এসে হাজির হয় এই কালের সাক্ষী কালবীর । ফাল্গুনীর অনুরোধেই সে তার পরবর্তী বংশধরদের রক্ষা করতে থাকে । তার বাবা শাহেদ এবং শাহেদের মেয়ে মিতুল । কালবীর অভূত ক্ষমতার অধিকারী তবে সে আটকে আছে । এবং দিন দিন তার ক্ষমতা কমে আসছে । মিতুল পারে তাকে মুক্তি দিয়ে কিন্তু সেইটা করার জন্য মিতুলের একটা কঠিন কাজ করতে হবে । যেটা মিতুল করতে পারছে না । 

অন্য এক টাইমলাইনে দেখা যায় মিতুলের বিয়ে হয়েছে সাদীর সাথে অথচ সাদী সেই বাস এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছিলো । সেখানে সাদী আর মিতুলের সুখের সংসার । সাদীও সেখানে প্রাইম আলফা নামে একটা রিসার্চ সেন্টার গড়ে তুলে যার কাজটাও ঠিক ঐ প্রোফেসর সুলতানের রিসার্চের মত । সেখানেই ঘটে যায় দূর্ঘটনা ! কিন্তু কেন ঘটছে এই সব দূর্ঘটনা !


গল্পের কাহিনী আসলে এই রকমই । এখন কিছুটা খাপছাড়া মনে হচ্ছে, মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক । কারন একটা মোট গল্পের তিন ভাগের এক ভাগ । এটা ছিল প্রথম খন্ড ! পুরো তিন খন্ড এক সাথে পড়া শেষ করেই মোট কাহিনী আরও ভাল ভাবে জানা যাবে আশা করা । এর জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হবে । 

কালবীর পড়তে আমার বেশ ভালই লেগেছে । তবে লেখার বর্ণনা পড়তে গিয়ে আমার কাছে একটু যেন অচেনা মনে হচ্ছে । শিহাব ভাইয়ের লেখার সাথে আমি আগেই পরিচিত । এই বইটা পড়ার সময় আমার বারবার কেবল মনে হয়েছে যে এই লেখার ধরনটা খানিকটা অপরিচিত । এটা হয়েছে কারন লেখাটা লিখেছে দুইজন । বেশ কয়েক স্থানে পড়তে গিয়ে আমার কেবল মনে হয়েছে যে এমন করে তো লেখেন না ! কয়েকটা স্থানে বর্ণনা পড়তে গিয়ে এই কথাটা বারবারই মনে হয়েছে । আমি মাদিহা মৌয়ের লেখার সাথে পরিচিত নই বলেই সম্ভবত এমনটা মনে হয়েছে । 

আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে গল্পে বিজ্ঞানের থিউরি গুলো আমার কাছে একটু বেশিই জটিল মনে হয়েছে । পুরোপুরি যে বুঝতে পেরেছি এটা জোর দিয়ে বলতে পারছি না । ঐ অংশ গুলো আমি দাগ দিয়ে রেখেছি । মিতুলের শিক্ষিকা যখন শাহেদকে থিউরীটা বুঝায় সেটা আমাকে আরও একটু ভাল করে বুঝতে হবে । পরবর্তি খন্ড গুলোতে আশা রাখি যে এই থিউরি গুলো আরও একটু ভাল ভাবে বুঝতে পারলে ভাল হবে। 

গল্প তিন ভাগের একভাগ পড়া হয়েছে । অনেকটা বিরিয়ানী মুখে দিয়ে বসে আছি এখনও মাংশের টুকরো টুকু মুখে দিতে পারি নি । কবে পারবো ঠিক নাই । আগ্রহ নিয়েই বসে আছি পরের কাহিনী জানার জন্য । কাহিনী জানতেই হবে ! 


কালবীর- আবির্ভাব
লেখকঃ ফরহাদ চৌধুরী শিহাব ও মাদিহা মৌ